বয়স্কদের অ্যাজমা হলে…
অ্যাজমা বা হাঁপানি আসলে শ্বাসনালির অসুখ। যদি কোনো কারণে শ্বাসনালিগুলো অতিমাত্রায় সংবেদনশীন (হাইপারসেনসিটিভ) হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন ধরনের উত্তেজনায় উদ্দীপ্ত হয় তখন বাতাস চলাচলের পথে বাধার সৃষ্টি হয়, ফলে শ্বাস নিতে বা ফেলতে কষ্ট হয়।
কেন হয় : সব বয়সেই অ্যাজমা হতে পারে তবে বয়স্কদের ব্যাপারে একটু বেশী সতর্ক থাকতে হয়। জেনেটিক পরিবেশগত কারণে কারও কারও বেশি হয়ে থাকে। ঘরবাড়ির ধুলো-ময়লায় মাইট জীবাণু, ফুলের বা ঘাসের পরাগ রেণু, পাখির পালক, জীবজন্তুর পশম, ছত্রাক, কিছু কিছু খাবার, কিছু কিছু ওষুধ, নানারকম রাসায়নিক পদার্থ ইত্যাদি থেকে অ্যালার্জিজনিত অ্যাজমা হয়ে থাকে।
অ্যাজমা কি ছোয়াচে রোগ : না, অ্যাজমা ছোঁয়াচে রোগ নয়। পারিবারিক বা বংশগতভাবে অ্যাজমা হতে পারে। কিন্তু ছোঁয়াচে নয়। অ্যাজমায় আক্রান্ত মায়ের বুকের দুধ খেয়ে শিশুদের অ্যাজমায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। মায়ের সংস্পর্শ থেকেও হওয়ার আশঙ্কা নেই।
প্রধান উপসর্গ : বুকের ভেতর বাঁশির মতো সাঁই সাঁই আওয়াজ, শ্বাস নিতে ও ছাড়তে কষ্ট, দম খাটো অর্থাৎ ফুসফুস ভরে দম নিতে না পারা, ঘন ঘন কাশি, বুকে আঁটসাঁট বা দম বন্ধ ভাব, ঘুম থেকে ওঠে বসে থাকা।
সমন্বিতভাবে অ্যালার্জির চিকিৎসা :
অ্যালার্জেন পরিহার : হাঁপানির হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার সবচেয়ে সহজ পন্থা হলো যে জিনিসে অ্যালার্জি তা যতদূর সম্ভব এড়িয়ে চলা। তাই অ্যাজমা রোগীদের প্রথমেই অ্যালার্জি টেস্ট করে জানা দরকার তার কিসে কিসে অ্যালার্জি হয়।
ওষুধ প্রয়োগ : নানা ধরনের হাঁপানির ওষুধ আছে। প্রয়োজন মতো ওষুধ ব্যবহার করে সুস্থ থাকতে পারেন।
ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপি : অ্যালার্জি দ্রব্যাদি এড়িয়ে চলা ও ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিনও অ্যাজমা রোগীদের সুস্থ থাকার অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি। এ পদ্ধতি ব্যবহারে কর্টিকোস্টেরয়েডের ব্যবহার অনেক কমে যায়। ফলে কর্টিকোস্টেরয়েডের বহুল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে রেহাই পাওয়া যায়। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে, বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা হয়ে থাকে।
ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস,
দি অ্যালার্জি অ্যান্ড অ্যাজমা সেন্টার, ঢাকা। ফোন : ৮১২৯৩৮৩