বিদেশের বাজার ধরতে চায় বস্ত্র প্রতিষ্ঠানগুলো

Share This
Tags

shilpo trade

দেশীয় বাজারের পরিবর্তে বিদেশের বাজারকে মাথায় নিয়েই ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশ নিয়েছে অনেক টেক্সটাইল কোম্পানি বা বস্ত্র প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। কাপড় বিক্রির চেয়ে কাপড়ের প্রচার-প্রচারণার চিন্তাই তাদের বেশি। কিন্তু মেলার অর্ধেক দিন পার হয়ে গেলেও বিদেশি কোনো আমদানিকারকের দেখা মেলেনি। কোনো আদেশও পায়নি তারা।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাণিজ্য মেলায় গতকাল মঙ্গলবার বিভিন্ন টেক্সটাইল কোম্পানির স্টলে গিয়ে আলাপ করে এ তথ্য জানা গেছে। এশিয়ান টেক্সটাইলের মতো বড় কারখানার পাশাপাশি বুলবুল টেক্সটাইল, রানা টেক্সটাইলের মতো মাঝারি ও ছোট কারখানারও শোরুম রয়েছে এবারের বাণিজ্য মেলায়। প্রতিবছরই তারা অংশ নেয় বলে জানা গেছে।

ব্লেজার, শার্ট ও প্যান্টের কাপড় উৎপাদনকারী এশিয়ান টেক্সটাইল। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে তৈরি পোশাক হয়ে রপ্তানি হয় এগুলো। সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীতেও দরপত্রে অংশ নিয়ে কাপড় সরবরাহ করে এ কোম্পানিটি। এশিয়ান টেক্সটাইলের মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) মোহাম্মদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগেরবারের তুলনায় এবার বিক্রি কম।’ এশিয়ান টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘মেলায় আমাদের পণ্যের বিক্রিটা মুখ্যও নয়। আমরা প্রচারের জন্যে আসি।’

১৯৬৫ সাল থেকে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি কুষ্টিয়ার বুলবুল টেক্সটাইল। চাদর, বিছানার চাদর, বিছানার কভারের জন্য কাপড় উৎপাদন করে এই কোম্পানি। তবে সরাসরি কিছু রপ্তানি করে না। এই কোম্পানির পণ্য রপ্তানি হয় পরোক্ষভাবে। মেলায় উপস্থিত কোম্পানির চেয়ারম্যান আবদুর রউফ জানান, ‘কেউ হয়তো আমদানি আদেশ নিয়ে এল, সে অনুযায়ী পণ্য তৈরি করে দিই আমরা।’ কয়েক মাসের রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাবে মানুষের হাতে নগদ অর্থের সংকট চলছে বলে মনে করেন তিনি।

এই কারণে মেলায় ভিড় কম। কুষ্টিয়ার কুমারখালীর রানা টেক্সটাইলেরও কথা প্রায় একই। এই কোম্পানির বিছানার চাদর, লুঙ্গি, তোয়ালে ও বিছানার কভার পরোক্ষভাবে রপ্তানি হয়।

মেলায় দলবেঁধে ঘুরতে আসেন ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছয় শিক্ষার্থী। তাঁদের একজন মালিহা করিমের সঙ্গে কথা হয় এক লুঙ্গির স্টলের সামনে। মালিহা বলেন, ‘চার বছর ধরে আমরা মেলায় আসি লুঙ্গি কিনতে। একবার বাণিজ্য মেলা থেকে লুঙ্গি কিনে পাঠালে বাবা খুব খুশি হয়েছিলেন। বাবা মারা গেছেন। তবে, চর্চাটা ধরে রাখছি। এক হাজার টাকা বাজেট, বড় ভাইকে একটা লুঙ্গি উপহার দেব।’

শার্ট-প্যান্টের পাশাপাশি লুঙ্গি পরে দেশের বিশাল এক জনগোষ্ঠী। পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও জয়পাড়ায় বেশি কারখানা। নরসিংদীতেও বেশ কারখানা রয়েছে লুঙ্গি তৈরির। এগুলো হচ্ছে বেক্সি, আমানত শাহ, ডিসেন্ট, পাকিজা, অনুসন্ধান, স্ট্যান্ডার্ড ইত্যাদি।

এবারের মেলায় অংশ নেওয়া আমানত শাহ লুঙ্গি ও বেক্সি লুঙ্গির স্টলে গিয়ে জানা যায়, দেশীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি রপ্তানিও হয় বিদেশের বাজারে। শ্রীলঙ্কা, ভারত, সৌদি আরব, দুবাই, মালয়েশিয়া প্রধান লুঙ্গি আমদানিকারক দেশ।

বেক্সি লুঙ্গির বিপণন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের মানুষ রয়েছেন যেসব দেশে, তাঁরাই মূলত এসব লুঙ্গি ব্যবহার করেন। এর বাইরেও করেন, তবে খুব কম। ২৯৫ থেকে এক হাজার ৮৫০ টাকা দামের লুঙ্গি রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি জানান, সিরাজগঞ্জে প্রতিদিন ১৬ লাখ লুঙ্গি তৈরি হয়।

আমানত শাহ লুঙ্গির ব্যবস্থাপক কামালউদ্দিন বলেন, এবারের মেলায় দর্শনার্থী আসছে কম। তাই বিক্রিও কম।

About the Author

-

Leave a comment

XHTML: You can use these html tags: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <strike> <strong>